Thursday, March 31, 2016

মৃত্যুর মিছিল জুড়ে হেঁটে চলে মোমবাতি।
শুয়ে থাকা গ্রীষ্মকালীন রাজপথ
মন দিয়ে শোনে নির্বিকার জড়তা।
মাথার উপরে ভ্রাম্যমান শিকারির ঠোঁট,
ছোঁ মেরে তুলে নেয় মুখে,
প্রসূতি মন্ড থেকে অজাত গর্ভের ভ্রূণ।
নির্বাচনী ছায়ামেঘে ঢাকা পড়ে সূর্যের মূখ,
এইবার শকুনের মোচ্ছব হবে।
ভাঙা অাড়ালের নীচে চাপা কান্না যত,
হাত বাড়ায়, ছোঁয়া পেয়ে হাত কাঁপে।
তিলোত্তমার বুকে ধ্বংসস্তুপ হাতড়ায় কাল।
মোমবাতিযাত্রায় শবদেহ বেড়ে চলে ক্রমে,
নিরবতা হাঁটে, জড়া হাঁটে, চেতনা হাঁটে,
ধর্মও হাঁটে শেষে মানুষের অভাবে।
মৃত শহরের বুকে বেদনা নেই, অাছে শান্তি,
যেমন থাকে গোরস্থানে, অথবা শ্মশানে।

Monday, March 21, 2016

মধ্যরাতে বদল হয় ছবি
বাসন্তী অার অাসমানী,
ফিকে হওয়ার পায় চুরান্ত অাকাশ।
তুলি মুখে জমে থাকে
অাবীর ফাগের কূটো,
পলাশের মতো গাঢ় কোনো
শরীর অার ফাঁকা নেই।
হাওয়া শরীরেও রং লাগেনা,
বোলপুরি কোনো মিঠে শাড়ি
সুরের অভাবে কমে অাসে,
অাঁচলের স্মৃতিটুকু আবহমান
বয়ে চলে গাঙ্গেয় উপত্যকায়।
মনোক্রোম ক্যানভাস,
বহন করে ছবির সাদা লাশ।
সব হত্যাই মধ্যরাতের,
বসন্তের শবযাত্রায়,
নত মুখে হাঁটে গ্রীষ্মের শহর।
অসামঞ্জস্যের ঘর।

Monday, March 14, 2016

"ছোঁয়াছুয়ি হবে জীবনের পরে"
স্বপ্ন অাঁকড়ে শুয়ে পড়ে দিন,
দিগন্তরেখার গায়ে...
বিষন্ন পায়ে এগিয়ে চলে রাত..
আকাশের মাটি মাখামাখি করে
পূবে লালনদী হয়ে অাসে ক্ষীন
মিলনতিথী ফুরোয়...
সাক্ষী শুধুই অর্ধ কলার চাঁদ..
কিছুই জমেনা জন্মান্তরে,
জনম জনম অাদরবিহীন
অাবহমান সময়...
কিছু জীবনের কেবলই সমানুপাত..

Friday, March 4, 2016

শব্দতৃষা নিয়ে
আমি  বসে থাকি,
মুহূৰ্তের কাছে..
যে মুহূর্তে কোনো ক্ষিদে নেই,
কোনো চাওয়া নেই, কোনো দাবী নেই..
কোনো ক্ষীণ শরীর নেই,
কোনো দ্ৰুত সঙ্গম নেই,
কোনো ব্যস্ত চুম্বন নেই..
যে মুহূৰ্তের
শুধু আকুতি আছে,
স্পৰ্শকাতর শব্দ আছে,
প্রকাশস্পৃহা আছে..
ব্রহ্মান্ডের  সেই সকল
মুহূর্তযোনির কাছে,
আমার অপার ঋণভার নিয়ে,
আমি বসে থাকি অবিচল..
এমন ঋণশোধকে
তুমি কবিতা বলে জেনো,
প্রেম বলে জেনো..

প্রচলিত Verse, a retrospective.,

"দুধ মাঙ্গোগে তো ক্ষীর দেঙ্গে..
কাশ্মীর মাঙ্গোগে তো চীর দেঙ্গে.."

আমার জন্ম কলকাতায়.. জন্ম ইস্তক বাংলা আমার মাটি, আমার মাতৃভাষা, আমার দেশ..পড়াশুনো শেষ হওয়ার পর থেকে মাটি কামড়ে পরে আছি.. জীবনযুদ্ধ.. জীবিকার সন্ধানে লড়াই.. আমার জড়াগ্রস্থ বয়সের ভারে নুব্জ শহর.. আমার উচ্চাকাঙ্খা আমার দেশের আকাশের থেকে উঁচু.. কানের পাশে প্ৰতিনিয়ত হাওয়ায় ভাসে শহরবাসীর দীর্ঘশ্বাস.. "হবেনা.. এখানে কিচ্ছু হবেনা..".. পিছুটানে বাধা পড়ে থাকি... আমার শহর আমায় বলে "ছেড়োনা, এত তাড়াতাড়ি হাল.ছেড়োনা..আমায় জড়িয়ে থাকো" মাটির টান বড় আমোঘ.. আমি প্রেমবিদ্ধ হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে আরো দৃঢ় হয়ে উঠি, অসমান লড়াই এর ময়দানে আমার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সব স্বপ্ন এক লহমায় মাটির জন্যে শহিদ হয়ে যেতে চায়.. দুধ নয়, ক্ষীর নয়, শুধু জড় বোবা মাটি..

বাংলার বাইরে যে বাঙালীরা থাকেন তারা সবাই প্রবাসী.. দিল্লী-মুম্বাই-বেঙ্গালুরুবাসী থেকে শুরু করে আমেরিকা-লন্ডননিবাসী, সকলে প্ৰবাসী..Non-residential-bengalli.. কি অদ্ভুত! ভারতের মধ্যে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক প্ৰবাসী.. দেশ তবে কোনটা? নাকি পুরোটাই.. ঘেঁটে যায়.. বিশ্বের আর কোনো দেশে এমন হয় কি? "সত্য রাষ্ট্রতন্ত্র! কি বিচিত্ৰ এই দেশ!"
দার্জিলিঙ এর গোর্খারা যখন পৃথক রাজ্যের দাবী করেন,আপামর বাঙালীর অভিমান হয়..বাংলার মাটি কাঁদে.. কিন্তু কেউ কাউকে চীরে দিতে চায়না.. বাংলা আগেই অনেক অস্ত্ৰপচার সহ্য করেছে..
দেশভাগের সময় যখন জাত আর ধর্মের নামে রাষ্ট্রনায়কেরা সোনার বাংলার খন্ড করে দিলেন, ভারতবাসী তখন সহনশীলতার ক,খ,গ,ঘ, শিখছিল..ইতিহাসের পাতায় একটিও উচ্চারণ পড়িনি আমি-" দুধ মাঙ্গোগে তো ক্ষীর দেঙ্গে, বেঙ্গল মাঙ্গোগে তো চীর দেঙ্গে".. তবে বাংলা কি ভারতবাসীর এত প্রিয় কিছু নয়? তাকে সহজেই তুলে দেওয়া গেছিল পূর্ব পাকিস্তানের হাতে? শুধু কাশ্মীর যত প্রিয়, পৃথিবীর ভূস্বর্গ,কোটি কোটি টাকার দেশী ও বিদেশী মুদ্ৰার পর্যটন ব্যাবসা,Annual revenue!!!! কাশ্মীর বড় প্রিয়..
আর সাধারণ কোনো কাশ্মীরি মেয়ে যে মাটি কামড়ে পড়ে থাকে, ক্ষিদের জ্বালা সহ্য করেও প্ৰবাসী হয়ে যায়না!!!! তার পেট, তার গর্ভ, তার ইজ্জতের প্ৰতি রাষ্ট্রনায়কদের কোনো জাতীয়তাবাদ নেই.. সেই সাধারণ মেয়েটির নাগরিক দাবী রক্ষার জন্য কোনো ট্রায়াল হয়না.. কোনটা সন্ত্ৰাসবাদ আর কোনটা জাতীয়তাবাদ বাঙালী মেয়ের সবটা ঘেঁটে যায়.. সে কখনো বরিশালে তার পূর্বপুরুষের ভিটে চোখে দেখেনি... কারণ বাংলা ভাগের সময় কারোর মনে এত গভীর জাতীয়তাবোধ ছিলনা..
হে ভূস্বর্গ ভালো থাকো.. সন্ত্ৰাসমুক্ত থাকো.. যেসব "ফ্রীঞ্জ এলিমেন্ট্স্" রা তোমার স্বাধীনতার দাবীতে সরব তারা সংখ্যালঘু... এবং লঘু ব্যক্তিদের কোনো দাবী ভারতের রাষ্ট্র সহ্য করেনা.. ফ্যাসীবাদী নায়ক তথা রাজনীতি ব্যাবসায়ী তথা মৌলবাদী White collar, কামুক  নেতা, ধর্ষক সামরিক শক্তি...এরাও একটা দেশ... বৃহত্তর দেশ...এই দেশে মাতৃদুগ্ধ ভাগ করে নিতে দোষ নেই, শুধু ভূক্ষন্ডভাগ নিয়ে রক্তক্ষয় অবস্বম্ভাবী...সাধারণ  মানুষের রুটি ক্ষীর সহযোগে রাজনৈতিক টেবিলে বসে প্ৰতিবেশী রাষ্ট্রের মুখে তুলে দিতে এখানে কোনো দেশপ্রেমে আটকায়না..

অভুক্ত মানুষের এই দেশে দুধের চেয়ে ভূক্ষন্ডের রাজনীতি বেশী.. সাধারণ মানুষ কেবলি সহনশীলতা প্ৰয়োগের পাঠ নিতে ব্যাস্ত.. চেরাচেরির কথা ভাবলেও গায়ে কাঁটা দেয়..রক্ত হিম হয়ে আসে..

হায় রে বাংলাদেশ! তোকে বাঁচানোর জন্যেও যদি এমন রাষ্ট্র থাকত..তোকে কেউ এভাবে "চীরে" দিতে পারতনা.. হতভাগীর দেশ ছিল শুধু, সাধারণ মানুষের দেশ...

Wednesday, March 2, 2016

ঘুম পেয়ে যায় পাহাড়ি নদীর,
সন্ধ্যা ফুরোয় অতর্কিতে..
বাঁশিরনেশা জাগল যদি,
কে ছুটে যায় তীরের দিকে?

"এই মেয়েটা খুঁজিস কাকে?"
অভিসারীর নাম ছিলনা..
যে দেহে শ্যাম, রাই সে দেহে,
দেহের কোনো নেই ঠিকানা..

চাঁদের গায়ে জলের ছায়া,
"জলেরও কি আরাম লাগে?"
বাদলা মাদল, মাতাল কায়া,
বাতাস রাঙায় প্রেমিক ফাগে..

নদীর কোনো ডাকনাম নেই,
বাঁশির সুরে কি নাম থাকে?
পাহাড়সূতা খোঁজে তাকেই,
সোহাগ বলে যেজন ডাকে..
হাওয়া ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় মুখ,
যেমন হঠাত্ অসতর্ক,
গোপন তোমার আঙুলস্পৰ্শ
পিঠে বোলায় ঊষা রঙের সুখ
আদর ছোঁওয়া মুখ..